রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি শরিফুজ্জামান নোমানী হত্যামামলার আসামিকে গুলি ও কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত পৌনে ৯টার দিকে নগরের পঞ্চবটী এলাকার খড়বোনার গাড়োয়ানপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন।
আহত ব্যক্তির নাম রবিউল ইসলাম ওরফে রবি (৪০)। তিনি যুবলীগের কর্মী। তার বাড়ি নগরের বিনোদপুর-মীর্জাপুর এলাকায়। তার ভাই শহিদুল ইসলাম শহিদ ৩০ নম্বর ওয়ার্ড (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনিও শিবির নেতা নোমানী হত্যা মামলার আসামি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিউল ইসলাম নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চবটী এলাকার গাড়োয়ানপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন। বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বাড়ির সামনে চার–পাঁচজন মোটরসাইকেলে এসে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এছাড়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যান। এতে রবিউল বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তার অন্য পা এবং দুই হাতে জখম হয়েছে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে ঘটনাস্থলে পাঁচটি গুলির খোসা পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, রবিউল বাড়ির পাশে মোটরসাইকেল থামিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল আসে। প্রথমে গুলির শব্দ শোনা যায়। রবিউল মোটরসাইকেল থেকে দৌড়াতে গিয়ে পড়ে যান। এরপর তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। শেষে একজন একেবারে কাছ থেকে তার পা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এরপর হামলাকারীরা চলে যান। এ সময় আহত রবিউল বলতে থাকেন, ‘ও বাপ ও মা আমি কী করেছি।’ এ সময় দুজন নারী ছুটে আসছিলেন, তবে গুলির শব্দ পেয়ে আবার তারা ফিরে যান। পাশ থেকে নারীরা চিৎকার করছিলেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ঘটনা সত্য। আহত রবিউল বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী বিনোদপুর বাজারে ছাত্রশিবির, ছাত্রলীগ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সেক্রেটারি শরিফুজ্জামান নোমানী নিহত হন।