বর্ষপঞ্জিকার হিসেবে প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল পেল না বসন্তের রঙিন উৎসবের উপলক্ষ্য। বাংলা বর্ষপঞ্জিকা মোতাবেক ১ বসন্ত তারিখে বাংলাদেশ পেল হোয়াইটওয়াশের লজ্জা। ঘরের মাঠে প্রায় ৯ বছর পর এমন অভিজ্ঞতা হলো টাইগারদের। মাঝের সময়ে ঘরের মাঠে খেলা ১৩টি সিরিজের কোনোটিতেই হোয়াইটওয়াশের তিক্ত স্বাদ পায়নি স্বাগতিকরা।
রোববার দুই ম্যাচ সিরিজের শেষটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছুড়ে দেয়া ২৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে পারেনি স্বাগতিক বাংলাদেশ, ম্যাচ হেরেছে ১৭ রানের ব্যবধানে। শেষদিকে মেহেদি হাসান মিরাজ প্রাণপন চেষ্টা করলেও, শেষপর্যন্ত আর পারেননি। যে কারণে তীরে গিয়ে তরী ডুবেছে মুমিনুল হকদের।
এর আগে চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল জিতেছিল ৩৯৫ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করে। সেই ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন কাইল মায়ারস। আর এবার দ্বিতীয় ম্যাচে বল হাতে বাংলাদেশকে ঘায়েল করেছেন রাহকিম কর্নওয়াল। দুই ইনিংসে তার শিকার ৯ উইকেট।
বাংলাদেশ সফরের দল ঘোষণার পর থেকে বলাবলি হচ্ছিল, টেস্ট-ওয়ানডে দুই সিরিজেই বাংলাদেশ পাবে সহজ জয়। ওয়ানডে সিরিজে প্রত্যাশামতোই প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছে টাইগাররা। কিন্তু টেস্ট সিরিজে বদলে গেল দান। প্রথম চট্টগ্রাম ও পরে ঢাকায় বাংলাদেশকে হারিয়ে টেস্ট সিরিজের ট্রফি নিয়েই বাড়ি ফিরছে ক্যারিবীয়রা।
সবশেষ ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেই হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। প্রায় ৯ বছর আগে ২০১২ সালের নভেম্বরে খেলা সেই দুই ম্যাচের সিরিজে দুইটি ম্যাচই জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়ের আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হওয়া সেই ম্যাচে ২৪৫ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ রান করা বাংলাদেশ দল, দ্বিতীয় ইনিংসে পারেনি ২৪৫ রান করতে। টিনো বেস্ট ও ভিরাসামি পারমলের বোলিং তোপে মাত্র ১৬৭ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকদের ইনিংস, ওয়েস্ট ইন্ডিজ পায় ৭৭ রানের জয়।
পরে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে কোনো সুযোগই দেয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মারলন স্যামুয়েলসের ২৬০, শিবনারায়ন চন্দরপলের ১৫০ ও ড্যারেন ব্রাভোর ১২৭ রানের সুবাদে ১০ উইকেটের বড় জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ পায় হোয়াইটওয়াশের তিক্ত অভিজ্ঞতা।
সেই সিরিজের পর মাঝের ৯ বছর সময়ে ঘরের মাঠে আরও ১৩টি সিরিজ খেলেছেন বাংলাদেশ। এর মধ্যে জিতেছে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১টি করে সিরিজ। এছাড়া ড্র হয় নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজগুলো।
পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজ হারলেও একটি করে ম্যাচ ড্র করেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া আফগানিস্তানের কাছে এক ম্যাচের সিরিজে হেরেছিল স্বাগতিকরা। সেটি এক ম্যাচের সিরিজ হওয়ায় হোয়াইটওয়াশ হিসেবে ধরা হবে না। আবারও সেই ক্যারিবীয়দের সামনে পড়েই নাকাল হলো টাইগাররা।