৩৯৫ রানের লক্ষ্য দিয়েও চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টে হার। ওই ম্যাচে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল বোলারদের। মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দুই দিন শেষে স্পষ্টভাবেই পিছিয়ে বাংলাদেশ। এবার কাঠগড়ায় ব্যাটসম্যানরা। আগ্রাসী ব্যাটিং করতে গিয়ে ব্যাটসম্যানরা নিজেদের সর্বনাশ ডেকে এনেছেন, আর দলকে ঠেলে দিয়েছেন বিপদের মুখে। এই দুই টেস্টে বাংলাদেশের খেলা বিশ্লেষণ করে সমালোচকদের কেউ কেউ আবার কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হককে।
মিরপুরে আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা তামিম ইকবালকেও প্রশ্নটি করা হয়েছিল। অধিনায়ক হিসেবে মুমিনুল কতটা সফল বা ব্যর্থ? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তামিম তাঁর অধিনায়কের পাশেই দাঁড়িয়েছেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সে এ কাজের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি। টেস্টে অধিনায়কত্ব করা সহজ কাজ নয়। ওয়ানডে বলেন, টি-টোয়েন্টি বলেন, সেগুলো একটা দিনের খেলা। টেস্টে অধিনায়কত্ব করা অনেক অনেক কঠিন।’
কঠিন এ কাজ মুমিনুল ভালোই করছেন বলে মনে করেন তামিম। মুমিনুল কতটা ভালো করছেন বা তাঁকে কেন বাংলাদেশের টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করেন, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তামিম, ‘ওর যে চিন্তাধারা, ওর যে পরিকল্পনা, ওর যে মনোযোগ, ওর যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, টেস্ট ক্রিকেটকে ও যেভাবে দেখে…আমার কাছে মনে হয় না, এখানে এর চেয়ে ভালো কেউ আছে, যে নেতৃত্ব দেবে।’
মুমিনুলের যোগ্যতা আর সামর্থ্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার পর তামিম আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে ও–ই বাংলাদেশ দলকে টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি। একটা বিষয় আপনাদের সবার মাথায় রাখতে হবে যে সে এখনো খুবই তরুণ।’ মুমিনুলকে বেড়ে ওঠার জন্য সময় দেওয়ার কথাও বলেছেন তামিম, ‘সে তরুণ, তাই সে ভুল করতেই পারে। এটা যেকোনো অধিনায়কই করে। আর সে এটা থেকে শিখবে। আমি নিশ্চিত সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও সামর্থ্যবান হয়ে উঠবে। ভবিষ্যতে দেখব, সে অনেক ভালো কিছু করছে।’
মুমিনুলকে কোন কোন দিক থেকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখতে চান, সেটা তামিম বললেন এভাবে, ‘কারও যদি মনোযোগ থাকে শুধু টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে, সেটা মুমিনুল। আমাদের দলে টেস্ট ক্রিকেটকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া এমন কারও নাম বলতে গেলেও মুমিনুল সেখানে ওপরের দিকেই থাকবে নিশ্চিতভাবে। সুতরাং আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সে–ই বাংলাদেশ টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সঠিক ব্যক্তি।’
মুমিনুলকে দলের সিনিয়র খেলোয়াড়েরা সবাই সব সময় সমর্থন দিয়ে যাবেন, এমনটাই বলেছেন তামিম, ‘আমরা তো অবশ্যই সমর্থন দিতে চাই। যখনই আমাদের কিছু বলার থাকে, আমরা বলি। ও যেটা ভালো মনে করে, সেটা নেয়। যেটা মনে করে, এখন দরকার নেই, সেটা নেয় না। যেটা একজন অধিনায়কের জন্য ভালো দিক। মাঝেমধ্যে এমনও হয় যে আমাদের মনে হয়, ও যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, ওটা আমাদের অনুসরণ করা উচিত, আমরা সেটা অনুসরণ করি। এমন নয় যে সিনিয়র হওয়ার কারণে সব সময় ওকে পরামর্শ দিতে থাকব।’
মুমিনুলের প্রশংসার শেষ অধ্যায়ে গিয়ে তামিম আরেকবার বললেন, ‘আমরা যখন অনুভব করি যে ওকে পরামর্শ দেওয়া দরকার, তখনই আমরা পরামর্শ দিই। সে আমাদের কথা শোনে। এমন নয় যে সে পরামর্শটা শোনে না। তবে সব কথার শেষ কথা, এ কাজের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি সে–ই।’