কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরায় সম্প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামের প্রতিবেদন ও তথ্যচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরানোর বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি বলে জানানো হয়েছে।
ফেসবুকের প্রধান কার্যালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশে ফেসবুকের জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান বেঞ্চমার্ক পিআর।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা বিটিআরসির কাছ থেকে ডকুমেন্টারি সরিয়ে নেওয়ার জন্য হাইকোর্টের লিখিত নির্দেশনা পাইনি। আমরা এই বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেইনি।’
এর আগে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরায় সম্প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামের প্রতিবেদন ও তথ্যচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরানোর বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
মন্ত্রী বলেন, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। ফেসবুকের বাংলাদেশ বিষয়ক কর্মকর্তা সাবহানাজ রশীদ দিয়ার সঙ্গেও কথা হয়েছে। ফেসবুক আদালতের নির্দেশনা চেয়েছিল। আমরা আদালতের নির্দেশনা তাদেরকে দিয়েছি।
এছাড়া ইউটিউব থেকেও সরানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা চলছে বলেও জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আলজাজিরায় সম্প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামের প্রতিবেদন ও তথ্যচিত্রটি বাংলাদেশের সব ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে অপসারণ করতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন। তবে বাংলাদেশে আলজাজিরার সম্প্রচার বন্ধের বিষয়ে কোনো আদেশ আদালত দেননি।
ছয় অ্যামিকাস কিউরি ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার বক্তব্য শোনার পর সেদিন এ সংক্রান্ত রিট আবেদনটি নিষ্পত্তি করে ওই আদেশ দেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ।
কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরায় ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রচার করা হয়। সেটি বিভ্রান্তিকর, বিদ্বেষমূলক ও মানহানিকর উল্লেখ করে দেশে আলজাজিরার সম্প্রচার ও ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এনামুল কবির ৮ ফেব্রুয়ারি রিটটি করেন। এতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ আটজনকে বিবাদী করা হয়।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি আদালত রিটের গ্রহণযোগ্যতাসহ কয়েকটি বিষয়ে মতামত দিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ছয় আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন।
গত সোমবার শুনানির ধার্য তারিখে তারা মতামত তুলে ধরেন। বাংলাদেশে আলজাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে হাইকোর্টের একই বেঞ্চে মত দেন পাঁচ অ্যামিকাস কিউরি। এই পাঁচ অ্যামিকাস কিউরি হলেন- এজে মোহাম্মদ আলী, ফিদা এম কামাল, কামাল উল আলম, প্রবীর নিয়োগী ও শাহদীন মালিক। এদিন অপর অ্যামিকাস কিউরি আবদুল মতিন খসরু বলেন, রিট আবেদনকারী ব্যক্তিগত ও জাতীয়ভাবে সংক্ষুব্ধ। আদালত ওই তথ্যচিত্র অপসারণের নির্দেশনা দিতে পারেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে আলজাজিরা ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রচার করে। এরপর বাংলাদেশ সরকার ও সেনাসদর থেকে প্রতিবেদনটির তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা ও মানহানিকর’ হিসেবে দাবি করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান সম্পর্কে জানায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু ‘উগ্রপন্থী ও তাদের সহযোগী, যারা লন্ডন এবং বিভিন্ন জায়গায় থেকে এসব করছে’, তাদের এই ‘বেপরোয়া অপপ্রচারকে’ বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাখ্যান করছে।